রোমান সাম্রাজ্যের উত্থান ও পতন - An Overview
রোম ও পারস্যের যুদ্ধ, উভয় রাষ্ট্রের সমস্যার কারণে অচলাবস্থা : দ্বিতীয় শাপুর এবং দ্বিতীয় কনস্ট্যান্টিয়াসের মধ্যে প্রথম দীর্ঘ যুদ্ধটি লেগে থাকল প্রকৃতপক্ষে রােমের খ্রিস্টান শক্তি এবং পূর্বদিকের খ্রিস্টান বিরােধী শক্তির সাথে। দ্বিতীয় কনস্ট্যান্টিয়াস পারস্যের তরুণ রাজার বিরুদ্ধে তেমন শক্তির পরিচয় দিতে পারলেন না। তিনি পারস্যের বাহিনীর কাছে ক্রমাগত পরাজিত হতে থাকলেন। কিন্তু ওদিকে পারস্যের বাহিনীরাও এতটা ক্ষমতা দেখাতে পারেনি যে রােমে ঢুকে পড়ে রােমের কোনাে প্রদেশ দখল করে বসে থাকবে। বিশেষ করে মেসােপটেমিয়ার উপরের দিকে নিসিবিসের দুর্গ, যেটি অ্যান্টিয়কের তিনশ মাইল উত্তরপূর্ব দিকে, রােমের প্রবল শক্তির প্রতীক ছিল সেটি। শাপুর সেই প্রদেশ দখলের চেষ্টায় তিন তিনবার আক্রমণ করেছিলেন। তিনবারই তিনি ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। কিন্তু তারপর কোনাে রাজাই যুদ্ধের ব্যাপারে আর ততটা আগ্রহী ছিলেন না। শাপুর অসভ্য উপজাতিদের বারংবার আক্রমণের কারণে রাজ্যের পূর্বদিকের খারাপ অবস্থা নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। এটাই রােমের উপরে আক্রমণের সময়ে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করছিল। অন্যদিকে কন্সট্যান্টিয়াস ধর্ম এবং বংশ নিয়ে বিচিত্র সমস্যায় পতিত ছিলেন।
গ্রিকদের সাথে সংঘাত ও দক্ষিণ ইতালি ও সিসিলিতে পিরিক যুদ্ধ
দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ ও সিজারের কাছে পম্পেই এর হার
স্পেন, পারগামাম ও সেলুসিড সাম্রাজ্যের পরিণতি
গ্যালাস ও তার স্ত্রীর ষরযন্ত্র ও মৃত্যু : ৩৫১ খ্রিস্টাব্দে কনস্ট্যান্টিয়াস যুদ্ধের প্রয়ােজনে পশ্চিমদিকে চলে গিয়েছিলেন। তিনি সে সময়ে একজন সেনাপ্রধানের সাথে লড়ছিলেন যিনি কিনা তার ভাই কন্সট্যানসের মৃত্যুর জন্য দায়ী। তখন পূর্বদিকের দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য তার একজনকে প্রয়ােজন ছিল। কারণ সেখানে ক্রমাগত নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। তিনি দেখলেন গ্যালাস তখন পঁচিশ বছর বয়সী যুবক। সিদ্ধান্ত নিলেন তাকেই এই ভার দিয়ে যাবেন। যুবক গ্যালাস হঠাৎ জেলের বন্দীদশা থেকে নিজেকে অ্যান্টিয়কের ক্ষমতাধর উত্তরাধিকারীর আসনে আবিষ্কার করলেন। নিজের অবস্থানের জন্য কৃতজ্ঞ হয়ে তিনি কনস্ট্যান্টিয়াসের বােন কন্সট্যানশিয়াকে বিয়ে করলেন। গ্যালাস সেই কাজ দায়িত্বের সাথে পালন করেননি। গ্যালাস আর তার স্ত্রী কন্সট্যানশিয়ার স্বেচ্ছাচারিতা এবং নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে অনেক গল্প প্রচলিত ছিল। তারা একাকি হয়তাে কন্সট্যানশিয়ার কোনাে ক্ষতি করতে পারতেন না কিন্তু জানা গিয়েছিল যে দুজনে মিলে কনস্ট্যান্টিয়াসকে সিংহাসন থেকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও সফল হয়নি। কন্সট্যানশিয়ার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। আর তার মৃত্যুর পরে গ্যালাসকে বন্দী করা হয়। ৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে গ্যালাসকে ফাঁসিতে ঝােলানাে হয়।
রোম সাম্রাজ্যের উত্থান (পর্ব ১৮): দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধ ২০৯-২০৭ খ্রি.পূ.
ক্র্যাসাসের পার্থিয়া অভিযান ও ব্যর্থতা
এ পৃষ্ঠায় শেষ পরিবর্তন হয়েছিল ১৭:৫৩টার সময়, ৭ জুলাই ২০২৪ তারিখে।
রোম সাম্রাজ্যের উত্থান (পর্ব-৩৩): প্রথম মিথ্রিডেটিক যুদ্ধ
এট্রুস্কান, গাউল ও স্যামনাইটদের পরাজয়ের মাধ্যমে ইতালিতে রোমান আধিপত্য
রোমানদের উৎপত্তি মূলত ইতালিতে। click here সাম্রাজ্যের রাজধানী রোমের নামানুসারে তাদের নামকরণ করা হয়েছে রোমান। শহর হিসাবে রোমের বিকাশের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী। টাইবার নদীর তীরে অবস্থিত রোম শহর চারদিকে সাতটি পাহাড় দিয়ে বেষ্টিত। শুরুতে রোমান সাম্রাজ্যের স্থানিক সীমা শুধু বর্তমান ইতালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে দু’শ বছর পর থেকে সাম্রাজ্যের সীমানা ইতালির বাইরেও প্রসারিত হতে থাকে। সেই সময়ে ইতালির বিভিন্ন অংশে বাস করত অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের মানুষ। তাই রোমান সাম্রাজ্যকে কোনো একটি বিশেষ জাতিগোষ্ঠীর সাম্রাজ্য না বলাই ভাল।
দিন গিয়ে রাত আসে। এমন সময় রেমুস দেখে ছয়টি শকুন তার মাথার উপর দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে উড়ে যাচ্ছে। একে দেবতাদের ইশারা ধরে নিয়ে সে উল্লসিত হয়ে পড়ে। কিন্তু পরদিন ভোরে রোমুলাসের মাথার উপর দিয়ে বারটি শকুন উড়ে গেলে সংখ্যার বিচারে ভারি হওয়ায় সে দাবি করে দেবতাদের রায় তার পক্ষেই গিয়েছে। যদিও নিয়মানুসারে প্রথম যে ইশারা পাবে তারই বিজয়ী হবার কথা, কিন্তু রোমুলাস ও তার অনুসারীদের দল ভারি হবার কারণে রেমুস অনিচ্ছাসত্ত্বেও তার কথা মেনে নিতে বাধ্য হয়।
চার সম্রাটের বছর (রা. ৬৮ – ৬৯ খ্রি.) এবং সম্রাট ভেম্পাসিয়ান (রা. ৬৯ – ৭৯ খ্রি.)
সার্বিক অবস্থা : প্রকৃতপক্ষে এভাবে মৃত্যুই ছিল তখন এক পরিণতি যেখান থেকে কারও কোনাে মুক্তি ছিল না। সম্রাট যেমনই হােক না কেন, বয়স্ক বা তরুণ, যুদ্ধে আগ্রহী কি বিদ্বেষী, জয়ী বা পরাজিত, প্রত্যেকের কপালেই জুটেছে নিজস্ব বিশ্বস্ত লােকেদের হাতে করুণ মৃত্যু। তখন পঞ্চাশ বছরব্যাপী এমনই চলছিল আর সেই ধারা থামানাের জন্য কোনাে আকস্মিক ঘটনা ঘটেনি সে সাম্রাজ্যে। সেখানে দরকার ছিল একজন নতুন শাসকের, যিনি কিছু নতুন নিয়মনীতি নির্ধারণ করতে পারবেন। তাকে যথেষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল এবং সৃষ্টিশীল হতে হবে যেন তিনি বুঝতে পারেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী করে নীতি বদলে যেতে পারে। দেশের আইনকানুন আসলে তখন দেশের জন্যই ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছিল। সেই সময়ে আরেকজন অগাস্টাসের প্রয়ােজন ছিল রােমান সাম্রাজ্যে। যতরকমের গৃহযুদ্ধ বাধানাের এবং বিদেশীদের আক্রমণ করার রীতি তারা অনুসরণ করছিল, নতুন সরকার গঠন করে এসব থামানের জন্য কেবল প্রয়ােজন ছিল অগাস্টাসের মতাে আরেকজন সম্রাটের। এমনটা সত্যিই হয়েছিল। আরেকজন অগাস্টাস এসেছিলেন সেই ধবংসপ্রাপ্ত সাম্রাজ্যে, তিনি হলেন চতুর্থ ইলিরিয়ান সম্রাট।